২০২২-২৩ প্রস্তাবিত বাজটে তৃতীয় লিঙ্গদের জন্য বরাদ্দ যথেষ্ট নয়

Wednesday, May 17, 2023

1236 Views

২০২২-২৩ প্রস্তাবিত বাজটে তৃতীয় লিঙ্গের জনগোষ্ঠীর মানুষদের চাকরি দিলে বিশেষ কর ছাড়ের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে।  একটা সময় ছিলো বাজেটে তৃতীয় লিঙ্গের জনগোষ্ঠীদের জন্য কিছুই বরাদ্দ ছিলো না।  কিন্তু বর্তমানে যতটুকুই বরাদ্দ হয়েছে, এটা ভালো দিক। কিন্তু এ বরাদ্দই যথেষ্ট নয় বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।  কি আছে  প্রস্তাবিত বাজেটে তৃতীয় লিঙ্গের জন্য বরাদ্দ।? আর কি দাবি করছে এই জনগোষ্ঠী ? শুক্রবারের বিশেষে সেই তথ্য তুলে ধরেছেন নিউজ নাউ বাংলার সিনিয়র রিপোর্টার ফারহানা নীলা।

প্রস্তাবিত বাজেটে তৃতীয় লিঙ্গ গোষ্ঠীর জন্য বরাদ্দ :

তৃতীয় লিঙ্গ ও প্রতিবন্ধীদের অর্থনীতির মূলধারায় অন্তর্ভুক্তির জন্য নতুন অর্থবছরের (২০২২-২৩) প্রস্তাবিত বাজটে আরও বেশি সুবিধা দেওয়া হয়েছে।

কোনো প্রতিষ্ঠান ২৫ জন তৃতীয় লিঙ্গ-প্রতিবন্ধীকে নিয়োগ দিলেই পাবেন বিশেষ কর ছাড়। আগে ১০০ জন তৃতীয় লিঙ্গ-প্রতিবন্ধীকে নিয়োগ দেওয়া হলে এই কর ছাড় পাওয়া যেত।

অর্থমন্ত্রীর বাজেট প্রস্তাবনা অনুযায়ী, কোনো প্রতিষ্ঠান তার মোট কর্মচারীর ১০ শতাংশ বা ২৫ জনের অধিক প্রতিবন্ধী বা তৃতীয় লিঙ্গের ব্যক্তিদের নিয়োগ দিলে ওই কর্মচারীদের পরিশোধিত বেতনের ৭৫ শতাংশ বা প্রদেয় করের ৫ শতাংশ যেটি কম তা নিয়োগকারীকে কর রেয়াত হিসেবে দেওয়া হবে।

এ বরাদ্দ তৃতীয় লিঙ্গের জনগোষ্ঠীদের জন্য যথেষ্ট নয়:

তৃতীয় লিঙ্গের জনগোষ্ঠীদের নিয়ে ১৯৯৬ সাল থেকে কাজ করে যাচ্ছে বন্ধু সোশ্যাল ওয়েলফেয়ার সোসাইটি।  প্রতিষ্ঠানটি ডেপুটি ম্যানেজার মো: মশিউর রহমান বলেন, ‘‘পূর্বে যা ছিলো বাজেটে তা ক্রমান্বয়ে বাড়ছে।  এটা একটি ভালো দিক।  কিন্তু জীবন জীবিকার চাহিদা অনুযায়ী এ বরাদ্দ নূন্যতম। ’’

তিনি বলেন,‘‘ যেহেতু এই জনগোষ্ঠী এমনিতেই নানাভাবে অবহেলিত। তাই তাদের জন্য বয়স্ক বা শিক্ষা ভাতায় বরাদ্দ আরো বাড়ানো উচিত।  এছাড়াও তাদের জন্য বিভিন্ন ধরনের ট্রেনিং বরাদ্দ আছে। কিন্তু আসলে ট্রেনিং শেষে তারা কোথায় যাবে বা কি করবে।  তাই তাদের জন্য লোনের ব্যবস্থা থাকা উচিত। যাতে করে ট্রেনিং শেষে লোনের মাধ্যমে তারা কোনো ব্যবসার মাধ্যমে নিজেদেরকে প্রতিষ্ঠিত করতে পারে। ’’

আমরা আরো সুবিধা চাই : তৃতীয় লিঙ্গ জনগোষ্ঠী

ময়মনসিং পলিটেকনিক ইন্সটিটিউট থেকে ইন্জিনিয়ারিং সম্পন্ন করেছেন আরিফা ইয়াসমিন ময়ূরি।  বর্তমানে হস্তশিল্পের একটি প্রতিষ্ঠান খুলেছেন। সেখানে কাজ করে আরো তার মতো আরো অনেক হিজড়া গোষ্ঠী।

ময়ুরী বলেন, ‘‘ আমরা অনেক বাঁধার মধ্যেও যারা লেখাপড়া সম্পন্ন করি, আমরা কিন্তু চাকরী পাইনা।  তখন নিজেদের শিক্ষা ও মেধাকে কাজে লাগিয়ে আমরা নিজেদের উদ্যেগেই কিছু করে থাকি।  তাও যাদের সামর্থ্য আছে তারা পারে। সবাই পারে না। ’’

ময়ুরী বলেন,‘‘প্রধানমন্ত্রী আমাদের অনেক ধরনের সুবিধা দিয়েছে।  আমরা এখন নির্বাচনে দাঁড়াতে পারি। ভোট দিতে পারি।  আগে তো লেখাপড়া বা চিকিৎসা থেকেও বঞ্চিত ছিলাম।  কিন্তু তারপরও কিছু ব্যতিক্রম রয়ে গেছে। ’’

‘‘দেখুন আমরা চাকরী করতে পারিনা।  যারা করি, তারাও কিন্তু কিন্তু ভ্যাট ও কর দেই।  এ বিষয়ে আমাদের সাথে স্বাধারণ জনগোষ্ঠীর মধ্যে পার্থক্য নেই।  সুপার শপ থেকে কিছু কিনতে গেলে নির্ধারিত মূল্যের বাইরে আমাদেরকেও ভ্যাট দিতে হয়। ’’

তৃতীয় লিঙ্গের জনগোষ্ঠী শোভা বলেন,‘‘ যেহেতু হিজড়া জনগোষ্ঠীরা এখন নাচ গান করে টা্কা তোলা থেকে দিন দিন সরে আসার চেষ্টা করছে।  লেখাপড়া ও চাকরী করে নিজের পায়ে দাঁড়াতে চাইছে, তাই আমাদের জন্য আরো সুযোগ সুবিধা বাড়ানো উচিত।  বিশেষ করে শিক্ষা খাতে বরাদ্দ বাড়াতে হবে। ’’

বাজেট প্রস্তাবনার পূর্বের আলোচনায় আমাদের অংশগ্রহণ নেই:

বন্ধু সোশ্যাল ওয়েলফেয়ার সোসাইটির ডেপুটি ম্যানেজার মো: মশিউর রহমান বলেন,‘‘আমরা দীর্ঘ সময় ধরে তৃতীয় লিঙ্গদের নিয়ে কাজ করছি।  তাদের কি কি সুযোগ সুবিধা প্রয়োজন আমরা জানি। কিন্তু বাজেট প্রস্তাবনার পূর্বে মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্টরা আলোচনায় থাকলেও, আমরা কিন্তু আলোচনায় থাকতে পারিনা।  তাই অনেক কিছু গ্যাপ থেকে যায়। ’’

তিনি বলেন,‘‘আমরা বিভিন্ন প্লাটফর্মে আলোচনা বা সেমিনারে হয়তো তাদের জন্য বিভিন্ন প্রস্তাবনা তুলে ধরছি বাজেটে।  কিন্তু আমাদের প্রস্তাবনা অর্থমন্ত্রী পর্যন্ত পৌছাঁয়না বা আমলে নেয়া হয়না। ’’

 

জাতীয় বাজেট প্রণয়ণ  বাস্তবায়নে সাধারণ জনগণের অংশগ্রহণ জরুরী : ডিবিএম

আয়কর সীমা

সকলের অংশগ্রহণে বাজেট প্রণয়ন ও বাস্তবায়নের দাবি জানিয়ে আসছে গণতান্ত্রিক বাজেট আন্দোলোন (Democratic budget moovment) ।  প্রতিষ্ঠানটির সভপ্রধান আমানুর রহমান বলেন,‘‘ জন অংশগ্রহণ ও জাতীয় বাজেটের বিকেন্দ্রীকরণ এখন সময়ের দাবি। এতে করে হয়তো প্রান্তিক জনগোষ্ঠীদের জন্য প্রস্তাবনাগুলোও উঠে আসবে। এ বিষয়ে ডিবিএম প্রস্তান করে আসছে ‘‘যে সকল কাজে স্থানীয় পর্যায়ের সমাধা করা সম্ভব সেগুলো স্থানীয় সরকার গুলোর হাতে ছেড়ে দেয়া এবং সে অনুযায়ী বাজেট বরাদ্দ বাটেক্স শেয়ারিং এর ব্যবস্থা প্রবর্তন করা। এবং জেলাভিত্তিক বাজেট প্রণয়নের উদ্যোগ নেয়া ’’

কর ছাড় পাচ্ছে তৃতীয় লিঙ্গদের কর্মসংস্থানের সুযোগ করে দেয়া প্রতিষ্ঠান:

প্রথমেই বলা হয়েছে, ২০২২-২৩ প্রস্তাবিত বাজটে তৃতীয় লিঙ্গের জনগোষ্ঠীর মানুষদের চাকরি দিলে বিশেষ কর ছাড়ের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে।  এটা কতটুকু কার্যকরী, সেটা জানতে খোঁজ নেয়া হয়েছিলো কয়েকটি প্রতিষ্ঠানে।  কিন্তু ২৫ জন হিজড়া গোষ্ঠী কাজ করছে এমন প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা খুবই কম।  সে হিসেবে বন্ধু সোশ্যাল ওয়েলফেয়ার সোসাইছি জানায়, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড এনবিআর আমাদের ট্যাক্স পুরোটাই মওকুফ করে দিয়েছে চিঠির মাধ্যমে।  যা খুবই ভালো একটি উদ্যোগ।  তাহলে অনেক প্রতিষ্ঠানই এই অবহেলিত জনগোষ্ঠীকে নিয়োগে উৎসাহ হবে।

কর্মক্ষম ও পিছিয়ে পড়া তৃতীয় লিঙ্গের জনগোষ্ঠীকে উৎপাদনমূখী কর্মকাণ্ডে সম্পৃক্ত করতে পারলে সামাজিক অন্তর্ভুক্তি নিশ্চিত হবে।  আর এই জনগোষ্ঠী এবং তাদের নিয়ে কাজ করা প্রতিষ্ঠানগুলোর আশা, চূড়ান্ত বাজেটে তাদের জন্য আরো বেশি সুযোগ সুবিধা বৃদ্দি পাবে।  নতুন বাজেটে না হলেও পরের বাজেটে যেনো তৃতীয় লিঙ্গের জন্য বরাদ্দ অন্তর্ভূক্তি বৃদ্ধি পায়, সেই প্রত্যাশা সংশ্লিষ্টদের।

Related Articles

Wednesday, May 17, 2023

By Democratic Budget Movement

1236 Views

Lorem Ipsum dolor sit amet, consectetur adipsicing kengan omeg kohm tokito Professional charity theme based on Bootstrap

Wednesday, May 17, 2023

By Democratic Budget Movement

1236 Views

Lorem Ipsum dolor sit amet, consectetur adipsicing kengan omeg kohm tokito Professional charity theme based on Bootstrap

Wednesday, May 17, 2023

By Democratic Budget Movement

1236 Views

Lorem Ipsum dolor sit amet, consectetur adipsicing kengan omeg kohm tokito Professional charity theme based on Bootstrap

Wednesday, May 17, 2023

By Democratic Budget Movement

1236 Views

Lorem Ipsum dolor sit amet, consectetur adipsicing kengan omeg kohm tokito Professional charity theme based on Bootstrap